Coronavirus and We - The Paragraph Recent Horrible Situation of the Whole World
সাম্প্রতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে লেখা প্রবন্ধ : করোনাভাইরাস ও আমরা।প্রাবন্ধিক -- খুশী সরকার
বর্তমানে বিশ্ব আক্রান্ত ভয়াবহ করোনা ভাইরাসে। ফলে বিপর্যস্ত স্বাভাবিক জনজীবন, স্তব্ধ শান্ত জীবনের ছন্দ, এই ঘটনা অবশ্য মানব জীবনে হঠাৎ করেই নেমে আসেনি। বহুবার নেমে এসেছে প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও কখনো ভাইরাস ঘটিত নানা মহামারী। তবুও এইবার নজিরবিহীনভাবে বিধ্বস্ত জনজীবন। কখনো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে মানুষ বিপর্যস্ত, কখনো আবার নানা ভাইরাসঘটিত সমস্যায় ভোগে। ভাইরাস ঘটিত নানা সমস্যা সর্বদা বায়ুবাহিত নাও হতে পারে। বর্তমানে ভয়াবহ করোনাভাইরাস বায়ুবাহিত নয় বলেই অনেকের ধারণা। বিশেষজ্ঞদের মতে এই ভাইরাস অত্যন্ত সংক্রামক এবং এর আধার একমাত্র মানব শরীর। মানুষ থেকে মানুষ ছড়িয়ে পড়ে করোনা অত্যন্ত দ্রুতগতিতে ফলে পরিণত হয় ভয়ঙ্কর।
করোনাভাইরাস কি?
এই সম্পর্কে জানতে হলে কোরোনা সম্বন্ধে আমাদের সম্যক জ্ঞান থাকা দরকার।
আসলে করোনা মানে সূর্যের ছটা। ভাইরাসটির গায়ে সূর্যের রশ্মির মতো বেশ কিছু কাঁটা দেখা যায় বলে এর নাম করোনা।
করোনা ভাইরাস একেবারেই নতুন নয়। এই ভাইরাসটি কোভিড-১৯ নামে। এর অর্থ করণা ভাইরাস আইডেন্টিফায়েড 2019 সালে।
অর্থাৎ এই ভাইরাসটির প্রথম সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল 2019 সালে তাই এমন নাম।
আসলে করোনাভাইরাস 500 ভাইরাস পরিবারের মধ্যে একটি প্রজাতি।
এই ভাইরাস মানুষ ছাড়াও অন্য পশুপাখি সকলের মধ্যে ছড়াতে পারে যিনি অদলবদল ঘটলে তা অন্যান্য পশু পাখিকে আক্রান্ত করতে পারে করোনা ভাইরাসের অন্য কয়েকটি উপপ্রজাতি পৃথিবীতে আগেই প্রকোপ ছড়িয়েছে যেমন সার্স (সেভিয়ার একিউট রেস্পিরাটরি সিন্ড্রম), মার্চ মিডিল ইস্ট রেস্পিরাটরি আবার কেউ ধরা যেতে পারে এর মধ্যে এরা সব কয়টি ইনফ্লুয়েঞ্জা প্রজাতির।
করোনাভাইরাসের উৎপত্তি চীনের উপেই রাজ্যের উহান শহরে। সেখানকার হাসপাতলে 2019 সালের 18-19 ডিসেম্বরের মধ্যে এক রিপোর্টে এই ভাইরাস সংক্রমনের খবর জানা যায়। সম্ভবত এই ভাইরাস যেহেতু বিভিন্ন প্রাণীর মধ্যে ঘোরাফেরা করে তাই মনে করা হচ্ছে ওখানকার সামুদ্রিক জীব ও কাঁচা মাংসের পাইকারি বাজার থেকে ছড়িয়েছে এই সংক্রমন। কারণ বাদুড় বাজারে বিক্রি হয় না ফলে বাদুর বিক্রেতারা সেগুলিকে বিক্রি করে রেস্তোরাঁয়।সম্ভবত বাদুড় ও অন্য কোন প্রাণীর মধ্যস্থতায় এই সংক্রমণ ছড়িয়েছে। সেই প্রাণীর মধ্যে ওই ভাইরাসের গঠন দ্রুত পরিবর্তিত হয়ে ঘটিয়েছে সংক্রমণ ঘনিষ্ঠ মানুষের মধ্যে। অবশ্য করোনা ভাইরাসের উৎপত্তি সম্পর্কে অন্য একটি মতও প্রভাব ফেলেছে। সেই মত অনুযায়ী করোনা ভাইরাসের কথা জানা গেছে অনেক আগেই, 1981 সালে প্রকাশিত মার্কিন লেখক ডিন কুনৎজ এর লেখা 'দি আইজ অব ডার্কনেস' নামক রহস্য থ্রিলারের গল্পে থেকে। গত মাসে ড্যারেন প্লাইমাউথ নামে এক লেখক এই রহস্য থ্রিলারের 39 নম্বর পর্ব কিছু পৃষ্ঠা উল্লেখ করে বলেছেন, এই উপন্যাসেই প্রথম করোনা ভাইরাসের পুর্বাভাস ছিল। তখন এই ভাইরাসের নাম ছিল 'উহান-- 400'। এই ভাইরাসকে জৈব-অস্ত্রের কার্যক্রমের কর্মসূচি হিসেবে নিজেদের গবেষণাগারে তৈরি করেছিল চীন। এছাড়াও উহান শহরের অদূরেই চীনের আরডিএনএ গবেষণাগারে এটি তৈরি হয়েছিল। বাস্তবে করোনা ভাইরাসের উৎপত্তিস্থলও চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানের একটি বাজার। কিছু অংশের দাবী উপন্যাসে উল্লিখিত ওই আরডিএনএ ল্যাব হলো আসলে 'উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি' যা করোনাভাইরাসের উৎপত্তির কেন্দ্রস্থল থেকে মাত্র কুড়ি কিলোমিটার দূরে।তবে অতীতের কোন ঘটনার সঙ্গে বর্তমানে কোনো ঘটনার মিল হতেই পারে তাই অনেকেই উড়িয়ে দিয়েছেন এই মত।
সাধারণভাবে করোনা ভাইরাস ছড়ায় অত্যন্ত দ্রুতগতিতে। যেহেতু এই ভাইরাস পাঁচশ পরিবারের মধ্যে একটি, যার বেশিরভাগই শুয়োর, উট, বাদুড় ইত্যাদি প্রাণীর মধ্যে ঘোরাফেরা করে করোনা ভাইরাস ছড়াতে পারে প্রাণী থেকে মানুষের মধ্যে যখন তারা খুব কাছাকাছি থাকে। 1966 সালে টাইরেল এবং বাইনো নামক দুই বিজ্ঞানী এই ভাইরাসকে প্রথম চিহ্নিত করে বলেন, এদের চেহারাটা গোল, যা থেকে বেরিয়ে আসে কিছু কৌণিক রেখা, যা অনেকটা সূর্যের চারপাশের রশ্মির মতো। করোনা শব্দের অর্থ মুকুট।উনবিংশ শতকে তিনবার তিনটি বড় ক্ষেত্রে প্রাণীদের থেকে মানুষে ছড়িয়েছে এই ভাইরাস। 2003 সালে সার্স যার উৎস ছিল বাদুড়, তা থেকে ভাইরাস আসে সিভেট বিড়ালে এবং তা থেকে সংক্রামিত হয় মানুষ। এর পরে মার্স নামক একটি মারাত্মক করোনা ভাইরাস 2012 সালে সৌদি আরবে দেখা দেয়। সেটাও বাদুড় থেকে এক কুঁজের উটে (ড্রমেডরি) ছড়িয়েছিল, যা থেকে আসে মানুষে। কোভিড-19 এ আক্রান্ত মানুষের থেকে পাওয়া জেনোম বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে সাদৃশ্য খুব বেশি। মনে হয় খুব সম্প্রতি মানুষের এটা ছড়িয়েছে কারণ এই ভাইরাসের জিনগত পরিবর্তন হয় খুব দ্রুত তাই আগে সংক্রমণ হয়ে থাকলে এর পরিবর্তন বেশি হতো।
এই ভাইরাস প্রধানত মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায় দুইভাবে:-
(1) যারা পরস্পরের কাছাকাছি আসেন (6 ফুটের কম দূরত্বে)।
(2) তরল ফোঁটার মাধ্যমে (ড্রপলেট)।
(3) সংক্রামিত ব্যক্তির হাঁচি বা কাশির মাধ্যমে এ রোগ সংক্রমিত হয়।
তাছাড়া রোগ লক্ষণ দেখা দেওয়ার আগেও সংক্রমিত ব্যক্তির থেকে এই রোগ ছড়াতে পারে তবে রোগ লক্ষণ দেখা অসুস্থ ব্যক্তির থেকেই ছাড়াই বেশি আশ্চর্য এই যে মানব দেহের বাইরে অনেকটা সময় এই ভাইরাসের অস্তিত্ব থাকে যেমন এয়ারোসোলের ফোঁটায় তিন ঘন্টা, ধাতব বস্তুতে 4 ঘন্টা, কার্ডবোর্ডে 24 ঘন্টা এবং প্লাস্টিক ও স্টেনলেস স্টিলে তিন দিন অবধি। ফলে মনে হয় হাওয়া থেকে বা কোনো জীবানু দূষিত বস্তু স্পর্শ করার মাধ্যমে মানুষের দেহে আসতে পারে তবে এ বিষয়ে আরও জানা দরকার যে এই ভাইরাসটি কত সহজে এবং অনেক বড় জনসংখ্যায় সংক্রমণ দীর্ঘমেয়াদী হতে পারে? দুর্ভাগ্যবশত কোভিড-১৯ বেশ সহজে ছড়াচ্ছে এবং টিকে থাকছে নানা দেশে। বিদেশযাত্রার জন্যই বিশ্বের মানুষ এখন পরস্পরের কাছাকাছি তাই এই ভাইরাস সহজেই ছড়াচ্ছে দেশ থেকে দেশে।
কোভিড-১৯ দেখা যাচ্ছে কাছাকাছি এলে এক ব্যক্তির থেকে দু তিন জনে ছড়িয়ে পড়তে পারে। ফলে সহজেই অনুমেয় যে কত কম সময়ে কত বড় জনসংখ্যা সংক্রামিত হতে পারে ! এখন মৃত্যুর হার ২ থেকে ৩ শতাংশ, ফ্লু তে সেখানে 0.১% অর্থাৎ কোভিড-১৯ এর তুলনায় কুড়ি থেকে ত্রিশ শতাংশ বেশি প্রাণঘাতী। তবে সার্স (১০শতাংশ)এবং মার্স (৩৬ শতাংশ)এর তুলনায় কোভিড-১৯ এর মৃত্যুহার কম, যদিও গোড়াই মনে হচ্ছিল যে প্রধানত ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিরাই আক্রান্ত হচ্ছে কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দেখা যাচ্ছে দুটি শিশু আক্রান্ত হয়েছে। তবে এই ভাইরাসের অনেক তথ্যই আমাদের এখনো অজানা।
বর্তমানে করোনাভাইরাস ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে গোটা বিশ্বে। বর্তমানে 184টি দেশ এপর্যন্ত আক্রান্ত। ইউরোপ সহ চিন, ফ্রান্স, জার্মানি, জাপান, ইতালি, দক্ষিণ কোরিয়া, ব্রিটেন, আমেরিকা, সুইজারল্যান্ড, ভারত প্রভৃতি দেশে আক্রান্তের সংখ্যা 16000 ছাড়িয়ে গেছে। প্রতিমুহূর্তে আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে চলেছে।
বর্তমানে গোটা বিশ্ব করোনার করাল গ্রাসে শ্মশান ভূমিতে পরিণত হয়ে চলেছে এর ভয়াবহ বিধ্বংসী রূপে আতঙ্কিত মানব জীবন। মানুষ সেঁদিয়ে গেছে একেবারে। মৃত্যুর বিভীষিকা হাতছানি দিচ্ছে প্রতিমুহূর্তে। ক্রমাগত বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল, জনশূন্য,ভয়ার্ত জীবন যাপন। ইতালিতে অব্যাহত মৃত্যু। ক্রমবর্ধমান মৃতদেহ সৎকারের লোকাভাবে চলছে গণকবরের সমাধি খনন। আপনজনের শেষ বিদায়ে কান্নার অবকাশ পর্যন্ত নেই। থাবা বসিয়েছে ভারতেও। মৃতের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। এই বিভীষিকাময় ভয়াবহ পরিস্থিতিতে করোনা ঠেকাতে চলছে জোর কদমে প্রস্তুতি। মানুষে ভাইরাসে লড়াই। এ বিষয়ে ইতালির পরামর্শ 'ব্রেক দি চেন'। এই পরামর্শ মূলমন্ত্র হিসেবে গ্রহণ করেছে ভারত সরকার। করোনার চেন ভাঙার লড়াইয়ে কঠিন পদক্ষেপে শুরু হয়েছে লকডাউন গোটা বিশ্বে একজোটে। বিশেষজ্ঞদের মতে, গোটা বিশ্ব যদি সমবেতভাবে পারস্পরিক সামাজিক বিচ্ছিন্নতায় ঘরবন্দি হয়ে জীবনযাপন করে তাহলেই করোনার থাবা থেকে ভারতকে মুক্ত করা সম্ভব কারণ এই মুহুর্তে জনসংখ্যার ঘনত্বের দিকে তাকিয়ে যদি করোনার রাস টেনে ধরা না যায় তাহলে ভয়ঙ্কর ছোঁয়াচে মহামারি করোনা থেকে মানুষকে বাঁচানো অসম্ভব হয়ে পড়বে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, একদিনের মারা যেতে পারে 30 কোটি মানুষ, তাই অত্যন্ত বাস্তবোচিত পদক্ষেপে ভারতের প্রধানমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রী গোটা দেশে 24 শে মার্চের মধ্যরাত থেকে 14ই এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত ঘরে বন্দি থাকার নির্দেশ প্রদান করেছেন। অত্যন্ত তৎপরতার সঙ্গে পুলিশ, ডাক্তার, নার্স ও হাসপাতাল অন্যান্য সমস্ত স্বাস্থ্যকর্মীরা নিরলস ভাবে নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে দিনরাত করোন আক্রান্ত রোগীদের সেবা করে চলেছেন। চিনে, ইতালিতে অনেক ডাক্তার নার্স করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির সেবার সান্নিধ্যে আসায় নিজেরাও আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। জ্বী ভাবী মৃতের হাড় ক্রমশ বেড়েই চলেছে তাতে অদূর ভবিষ্যতে এর পরিণতি কি ভয়াবহ হতে পারে তা ভাবলে গা শিউরে ওঠে।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সর্বত্র চলছে করোনা দমন করার ওষুধ আবিষ্কারের প্রয়াস। কিছু ঔষধেরও সন্ধান পাওয়া গেছে। এন্টিভাইরাস ড্রাগ ও বিশেষ কিছু ড্রাগ দিয়ে একটি প্রটোকল তৈরি করেছে আমেরিকার আটলান্টার কিন্তু ওষুধ যে কাজ করছে তা প্রমাণের জন্য সময়ের প্রয়োজন। সারা বিশ্বে করোনার টিকা তৈরীর কাজ তীব্র গতিতে চলছে তবুও নিরাপদ ও কার্যকর ভ্যাকসিন পেতে 12 থেকে 18 মাস সময় লাগবে। চলছে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা কিন্তু একমাত্র সচেতন সতর্কতার মাধ্যমেই বর্তমানে প্রচন্ড ভাবে চলছে করোনাভাইরাসকে ঠেকানোর অদম্য চেষ্টা।
তবে করোনাভাইরাসকে ঠেকাতে এই মুহূর্তে প্রতিষেধক ভ্যাকসিন না পেলেও সচেতনতাই এই ভয়ঙ্কর রোগ থেকে মুক্তির একমাত্র উপায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশে এই ভাইরাস যেমন দ্রুতগতিতে ছড়াচ্ছে তাতে বোঝা যাচ্ছে যে কেবল এর বিস্তার রোধ করলেই হবে না, এর বিস্তার বৃদ্ধির হার কমাতে হবে। এর জন্য দরকার ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা যেমন এলকোহল যুক্ত সাবানে বার বার কমপক্ষে কুড়ি সেকেন্ড ধরে হাত ধোয়া, বিশেষত খাবার আগে কিংবা কোনো কিছুর স্পর্শ বা বাইরে থেকে এসে হাত ধোয়া একান্ত প্রয়োজন। এই দীর্ঘ সময় ধরে ঘষে ঘষে হাত বারবার ধোয়ার ফলে করোনাভাইরাসের জীবাণু ধ্বংস হবে, আর এটিই একমাত্র সঠিক প্রতিষেধক। তবে কোনোভাবেই হাত দিয়ে নিজের নাক, মুখ, চোখ স্পর্শ করা যাবে না। সংক্রামিত ব্যক্তিকে রাখতে হবে বিচ্ছিন্নভাবে। যেকোনো জমায়েত (সাত জনের উর্ধ্বে) এড়িয়ে যেতে হবে, যেখানে সেখানে থুতু বা কফ ফেলা যাবে না। সবচেয়ে জরুরি করোনার সম্ভাবনার জন্য প্রস্তুত থাকা এবং প্রত্যেকের দায়িত্ব অত্যন্ত সতর্ক ও বিবেকবান হয়ে WHO এর অর্থাৎ বিশ্ব স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশ মেনে চলা। এই নির্দেশযথাযথ ভাবে পালন করলেই হয়তো করোনার বিস্তার প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।
গোটা দেশে 24 শে মার্চ থেকে 14 ই এপ্রিল ভারত সরকার করেছেন অর্থাৎ সামাজিক বিচ্ছিন্নতা পারে ভারতবর্ষের মতো জনবহুল দেশকে করোনার ভয়ংকর থাবা থেকে রক্ষা করতে, তাই এই সঠিক সিদ্ধান্ত প্রত্যেক ভারতীয় নাগরিকের মেনে নেওয়া একান্ত পালনীয় কর্তব্য। 130 কোটি লোকের বাস এই ভারতবর্ষে, অন্যদিকে অত্যন্ত দ্রুত সংক্রমণকারী ভাইরাস করোনা তাই একবার যদি এই সংক্রমণ ভারতবর্ষে শুরু হয় তাহলে তাকে রোধ করা বড় কষ্টকর হয়ে পড়বে। আশু কর্তব্য এই সিদ্ধান্তকে অপরিহার্য মনে করে গৃহবন্দি জীবনযাপন একান্তই কাম্য। অর্থাৎ করোনাভাইরাসের যে সম্প্রসারণের চেন বা শৃঙ্খল তা যদি মানব শরীর না পায় তাহলে সে ধ্বংস হয়ে যাবে। এই মারণ রোগের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার এটিই মোক্ষম উপায়। এক মাসের ব্যবধানে উজার হয়ে গেছে অনেক দেশ তাই মানুষ আজ বিষাক্ত, বাতাস বিষাক্ত, হয়তো বা শরীরও বিষাক্ত হয়ে গেছে এতক্ষণে আমাদের অজান্তেই।
তাই আতঙ্কিত না হয়ে, দীর্ঘশ্বাস না ফেলে শুধু ভারত সরকারের অটল সিদ্ধান্তকে সচেতনভাবে মেনে নেওয়া প্রত্যেক নাগরিকের অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তার ও আনুগত্যের কাজ তবেই এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি থেকে আমরা রক্ষা পাবো, বাঁচব আমরা, বাঁচবে দেশ। আমাদের সচেতন থাকতে হবে মনেপ্রাণে, যে যদি আমি ভুলবশত কোনো আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে বা অজান্তেই সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসি তাহলে আমার সঙ্গে সঙ্গে গোটা পরিবার ধ্বংস হয়ে যাবে, আর এই ধ্বংসের কারণ হবো একমাত্র আমি। সুতরাং মাত্র দু সপ্তাহ আমাদের প্রধানমন্ত্রীর লকডাউনের উদ্দেশ্যকে মান্যতা দিই। আর এর প্রয়োজনে আরো বেশি করে হয়ে উঠতে হবে আমাদের সামাজিক ও মানবিক। আসলে এই দুঃসহ পরিস্থিতির মোকাবেলায় মানসিকভাবে জোটবদ্ধ থাকতে হবে আমাদের। তাই এই দু সপ্তাহ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমরা হয়ে উঠি প্রকৃত ভারতবাসী এবং সাধ্যমত দারিদ্রসীমার নিচে বসবাসকারী অসংখ্য দরিদ্র মানুষের এই ভয়াবহ আর্থিক সংকট কালে পাশে থেকে হয়ে ওঠে মানবিক, হয়ে ওঠে তাদের আশ্রয়স্থল ও নির্ভরশীল বিশ্বস্ততার প্রতীক, আর প্রসারণ ঘটাই আমাদের মানবিক চেতনার।
No comments:
Post a Comment