Summary of the story: - People do not get what they want. The way he thinks, but the result is the opposite of him. The only demand of every human being is a happy and secure life.
But in the workplace it is seen that the more he goes behind happiness, the more he faces suffering. Children are not excluded in this case. Sometimes they want to enjoy pleasure, but they get sorrow.
Life's religion is probably the same. That is why, If you are very emotional, then the opposite result may entered.
This unexpected opposite result is highlighted in the story.
গল্পের সারমর্মঃ- মানুষ ইচ্ছেমত কাঙ্খিত বস্তুকে পায় না। সে যা ভাবে, হয় তার উল্টো। প্রত্যেকটি মানুষের একমাত্র চাওয়া সুখী নিশ্চিন্ত জীবন কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা যায়, সে যতই সুখের পিছনে ধায়, ততই দুঃখের সম্মুখীন হয়। এক্ষেত্রে শিশুরাও বাদ যায় না। কখনো কখনো তারাও আনন্দ চেয়ে পায় দুঃখ। জীবনের ধর্মই হয়তো তা-ই। সে কারণেই কোনো বিষয়ে খুব আবেগী হলে বিপরীত ফল ফলতে পারে। এই অপ্রত্যাশিত বিপরীত ফল গল্পের মধ্যে তুলে ধরা হয়েছে।
ছোটো গল্প :
পুজোর জামা - খুশী সরকার
ও ঠাম্মি, বাবা কবে আসবে গো? তোতোন আকুল হয়ে জিজ্ঞাসা করে ঠাম্মিকে।
ঠাম্মি সান্ত্বনা স্বরে বলে, আসবে রে বাবা, আসবে। কালই আসবে। তোর মাকে বল্, ফোন করেছে কিনা, যা মাকে জিজ্ঞেস কর্।
--- মা ঘুমোচ্ছে। জানো ঠাম্মি, আমার বন্ধু পুলক, বরুন ওদের সবার পুজোর জামা কত সুন্দর! ওদের বাবা- মা' কিনে দিয়েছে। আমাকে সকালে ওদের জামাপ্যান্ট
স--ব দেখিয়েছে। আমাকে বলল, কিরে তোদের এবার পুজোয় জামা হবে না? আমি বললাম, হ্যাঁ হবে তো। বাবা আমাদের খুব সুন্দর জামা আনবে।
---- ও, তাই নাকি? তো কই? তোর বাবা তো এখনো এলো না। আগামী কালই আসবে,তোতোন মাথা ঝাঁকিয়ে বলে।
-----ঠি--ক আছে। দেখব তোর বাবা কত সুন্দর জামা আনে।
মন খারাপ করে বাড়ি এসেই তোতোন আবার ঠাম্মিকে বলে, বাবাটা না কেমন,ঠাম্মি! কবে যে আসবে। পুজো শুরু হয়ে গেল। ও ঠাম্মি, জানো, রাস্তার পাশে যে বড়ো পুজোটা হয় ,এবার খুব সুন্দর লাইটিং করেছে।
তিন্নি বলে, কিরে দাদা?
-----লাইটিং। তোতোন বোনকে আদর করে বলে, তুই দেখবি বুনু? চল, তোকে দেখিয়ে আনি কিন্তু জানিস, ওখানে ঠাকুরের সামনে যে প্যান্ডেল হয়েছে, কতগুলো বাচ্চা বসে থাকে, ওরা সবাই নতুন জামাপ্যান্ট পড়ে থাকে। ওদের কত---গুলো--
---- দাদা মন খারাপ করিস না। বাবা আসবে তো, মা বলেছে---এ, আমরা গরীব। বাবা বাইরে কাজ করতে গেছে। কাজ করে আমাদের জন্য নতুন জামা ও প্যান্ট আনবে। আমাদের তো একটা জামান হলেই হবে, তাই না, দাদা? দূরে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কথাগুলো শুনছিল তোতনের ঠাম্মি। মনে মনে ভাবছিল, বাচ্চা দুটো নতুন জামার জন্য কেমন আকুলি-বিকুলি করছে। আ--হা-রে, কিন্তু আমার তো পোড়া কপাল, ওদের দাদু চলে যাবার পর আমার তো কিছু দেবার কোনো ক্ষমতায়ই নেই। ওই একমাত্র ছেলে আমার। ওর উপরই তো গোটা সংসারের ভার। আর ছেলেটাই বা কি করবে? বিদেশ থেকে সামান্য ক'টা টাকা রোজগার করে। সংসার চালাতেই ছেলেটা হিমশিম খাচ্ছে । কালকে আসবে বলেছে। ওদের জামা কাপড় কিনতে পারলো কি--না----
মিনতি হাই তুলতে তুলতে বাইরে এসে তিন্নিকে দেখেই বলে উঠলো, কিরে আবার জামা, জামা, তাই না? শুধু অন্যের দেখা। জানিস না, তোদের বাপ গরিব। গরিবের ছেলেমেয়ের অত শখ থাকতে নেই, বুঝিস না?
ঠাম্মি শান্ত স্বরে বলে, বৌমা, ওদের বকছো কেন? ওরা বাচ্চামানুষ। ওরা কি সংসারের অতশত বোঝে? পুজোতে সবাই নতুন জামা প্যান্ট পড়ছে, তাই ওদেরও পড়তে ইচ্ছা করছে, তাই বলছে আর কি।
----- ওদের হয়ে ওকালতি তো করবেনই কিন্তু ওদের বুঝতে হবে, যে ওরা এক গরিব বাপের সন্তান। পুজোয় নতুন জামা পড়ার ইচ্ছা থাকলেও মুখে বলতে নেই।
ফোনে বলেছে, কাল আসবে জামা প্যান্ট নাকি কিনেছে ,এলেই দেখতে পাবে।
মুখ কালো করে দুই ভাই বোন কাঁদো কাঁদো করে বসে রইল। তিন্নি হঠাৎ বলল ,দাদা, আর কিছু বলিস না, হ্যাঁ। মা কিন্তু রেগে গেছে ,বুঝলি।
--- কেন ?
----বাবা তো আসবে । তুই বার বার বলছিস,তাই। তোর আর আমার জন্য নতুন জামা আনবে আর কালকেই তো ষষ্ঠী রে দাদা, ও-ই যে ঠাম্মি বলছিল। বাবা এলেই আমরা নতুন জামা,কাপড় পড়ে সবাই ঠাকুর দেখতে যাবো, কেমন।
রাতে তোতোন ও তিন্নি তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ল। খুব সকালে উঠেই তিন্নি দাদাকে ডাকতে লাগল। অ্যাঁ দাদা, ওঠ, সকাল হয়ে গেছে । বাবা চলে আসবে তো। মা বলেছে, বাবা ট্রেনে আসবে খুব সকালে, স্টেশনে পৌঁছে তাড়াতাড়ি বাড়ি চলে আসবে। দাদা বল্, বাবাকে কতদিন দেখিনা----। শোন না, মা ও ঠাম্মি এখনো ঘুমোচ্ছে ।চল্ না, আমরা দুজনে ওই বড় রাস্তায়, আমি শুনতে পেলাম, ট্রেনটা চলে এলো। আমরা বাবাকে নিয়ে এসে মা ও ঠাম্মিকে চমকে দেব।
-------হ্যাঁ ,ভালো বললি তো। চল্, মা ও ঠাম্মি উঠে আমাদের দেখতে পাবে না যখন কাঁদো কাঁদো হয়ে আমাদের খুঁজবে আর তখনই, ঠিক তখনই বাবাকে নিয়ে এসে সামনে দাঁড়াবো, কেমন হবে, বল্।
---- ঠিক বলেছিস, দাদা। চল্ অমনি দে ছুট ভাই বোনে। পাঁচ মিনিট হাঁটার পর তিন্নি বলল, দাদা বাবাকে যদি দেখতে না পাই, কি করবি? আবার বেশি দেরি করলে তো মা ঠাম্মি খুব চিন্তা করবে, বল্, তাছাড়া মায়ের যে রাগ পরে হয়তো মারবে আমাদের।
---চল্ না, বেরিয়ে যখন পড়েছি আগে বড় রাস্তার কাছে যাই তো, পরে দেখা যাবে।
----------আচ্ছা চল্, দুজনে একটু পরেই পৌঁছে গেল বড় রাস্তার ধারে। রাস্তার ওপারে স্টেশন থেকে আসার পথ চেয়ে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে তাকিয়েই আছে ওই নির্জন সকাল বেলা। আর বড় রাস্তা অর্থাৎ ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক দিয়ে বড় বড় ট্রাক কেবল হুসহুস করে ওদের পাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে। এদিকে তো বাড়িতে কান্নাকাটি শুরু হয়ে গেছে, কোথায় গেল ওরা? একে ওকে মিনতি জিজ্ঞাসা করে খুঁজে বেড়াচ্ছে। বার বার মনে হতে লাগলো তার, কেন যে তোতোন, তিন্নিকে কাল অত বকলাম, ওরা তো বাচ্চা, অন্যদের নতুন জামা দেখলেই তো নিজেদের ইচ্ছা করবে। শিশুরা কি সংসারের অভাব-অনটনের কথা বুঝতে পারে কিন্তু কি বা করবো আমি ? ভাবতে ভাবতে খুঁজে চলেছে ।এদিকে বাড়িতে দাওয়ায় বসে ঠাম্মি তো কেঁদেই চলেছে।
কিছুক্ষণ পর দৌড়ে একটি ছেলে এসে বললো, ও ঠাম্মি, তোতোন তিন্নিকে পাওয়া গেছে গো।
---- কোথায় বাবা?
------ওই বড় রাস্তার ধারে কিন্তু ওখানে খুব ভিড় ,এক পাশে ওদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আমি খবর দিতে আসলাম।
-----চল্ তো। কোথায় আছে ওরা। তিন্নির ঠাম্মা যেতে যেতে দেখল তিন্নির মাকে, বলল, চল, চল, তোতোন তিন্নি নাকি বড় রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে। অমনি যেতেই তিন্নির মা আগে ওদের দেখতে পেয়ে দৌড়ে গিয়ে হাত ধরে ওদের কাছে টেনে বলে ,এখানে তোরা কি করছিস? কেন এসেছিস তোরা?
---- বাবাকে দেখতে এসেছিলাম। তোদের বাবা কোথায় ? তোরা কাঁদছিস কেন? তিন্নি হাত দেখিয়ে বলে ,ওই যে---- চোখে জল তিন্নির, শুধু ফোঁপাচ্ছে।
---ওখানে? ওখানে তো অনেক ভিড়, তিন্নি কাঁদতে কাঁদতে বলে, বাবা-- , বলেই জোরে চিৎকার করে কাঁদতে থাকে।
----- কি হয়েছে বল? বাবাকে রাস্তার ওপারে দেখতে পেয়ে আমি দৌড়ে রাস্তা পার ------ হচ্ছিলাম, অমনি বাবা আমাকে দেখে দৌড়ে 'তিন্নি' বলে দূরে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়, আর তখনই ওদিক থেকে একটি বড় ট্রাক এসে বাবাকে ধাক্কা দিয়ে চলে যায়। বাবা ওখানে পড়ে আছে, আমি বাবাকে কত ডাকলাম। বাবা সাড়া দিচ্ছে না। লোকজন এসে আমাকে দাদার কাছে রেখে যায়। তারপর বাবাকে আর দেখতে পাচ্ছি না।
মিনতি চিৎকার করে বলে, ভগবান? একি সর্বনাশ হলো রে------।
অমনি উঠেই 'দেখি' 'দেখি' বলে মিনতি ভিড় ঠেলে ভিতরে ঢুকেই দেখে মানুষটা থেঁতলে পড়ে আছে। দূরে ছেলেমেয়েদের রক্তমাখা নতুন জামা কাপড় ছড়ানো,
দেখেই হঠাৎ পড়ে যায় মাটিতে।
এদিকে তখন মা দুর্গার বোধন হচ্ছে।
চারদিক আলোর রোশনাই,
লাইটিং আর মাইকে চলছে আগমনি গান--
'বাজলো তোমার আলোর বেণু'।
সমাপ্ত
প্রকাশের তারিখ--১৩-১০-২০১৮।
No comments:
Post a Comment