Ragging-er Kabale Bengali Short Story written by Khushi Sarkar
Story Name - Raging Er Kabale,
Category - Bengali Short Story,
Title - Childless Lament,
Written by - Author Khushi Sarkar,
Word Count - Four Hundred,
গল্পের নাম - র্যাগিং-এর কবলে
বিভাগ - বাংলা ছোটগল্প
শিরোনাম - সন্তানহারা হাহাকার,
কলমে - খুশী সরকার,
শব্দ সংখ্যা- চারশত
'র্যাগিং-এর কবলে' বাংলা ছোটগল্পটি লিখেছেন কবি খুশী সরকার
র্যাগিং-এর কবলে
"মা, মা" হঠাৎ উর্মির চিৎকার। "কী হলো রে? "বনানী জিজ্ঞেস করতেই ভয়ে নীল উর্মি ইশারায় বইয়ের দিকে দেখায়। বইয়ের উপর একটা আরশোলা দেখে বনানী বলে, সামান্য একটা আরশোলা দেখে এইভাবে চিৎকার করছিস,হোস্টেলে থাকবি কেমন করে?
স্বস্তিতে উর্মি বলে, হোস্টেলে কি আরশোলা থাকে?"
"আরশোলা না থাকলেও ভয়-টয়ও তো থাকতে পারে।"
মণিশঙ্কর বলে ওর ভয়ের চেয়েও আমার ভয় বেশি র্যাগিংএ। যাদবপুর ইউনিভার্সিটিতে যা-হয়ে গেল! উর্মি অমনি বলে,মেয়েদের হোস্টেলে ঐরকম র্যাগিং হয় না,বাবা।"
মণিশঙ্কর দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে,"তাহলে তো নিশ্চিন্ত।"
উর্মি আজ বাবার সঙ্গে রাত্রি নটার ট্রেনে হোস্টেলে যাচ্ছে। মাও এসেছে স্টেশনে। ট্রেন আসতেই উঠে পড়ে ওরা। চলন্ত ট্রেনটার দিকে চেয়ে বনানী প্রার্থনা করে, "মেয়ের যেন স্বপ্ন পূরণ হয় ঠাকুর। ওর যে অধ্যাপিকা হওয়ার বড় ইচ্ছে।"
চোখের জল মুছতে মুছতে ফিরে আসে বনানী। মেয়ের জন্য দুশ্চিন্তা হলেও সামলে নেয় উর্মির স্বপ্নের কথা ভেবে। ওদের হোস্টেলে র্যাগিং হয় না ভেবে স্বস্তি পায়।
পর পর দুদিনই ফোন করেছে মেয়েকে মণিশঙ্কর। একদিন পর আবার করেছিল। সেদিন উর্মি বলেছিল দ্বিতীয়বর্ষের দিদিরা তাকে ডেকেছে। মণিশঙ্কর বলেছিল, "সাবধানে কথা বলিস,মা।"
পরদিন সকালে বনানীর অনুরোধে সকাল ৯টায় ফোন করতে গেলে মণিশঙ্করের মোবাইল বেজে ওঠে, মণিশঙ্কর হাসিমুখে বনানীকে বলে, "দেখো দেখো মেয়েই ফোন করেছে।" মণিশঙ্কর ফোনটা রিসিভ করতেই ভেসে আসে অন্য কণ্ঠ, কাকু,আমি উর্মির বান্ধবী বলছি, "তোমরা তাড়াতাড়ি হস্টেলে চলে এসো।"
"কেন? উর্মি ভালো আছে তো?"
মণিশঙ্করকে উদ্বিগ্ন দেখে আতঙ্কিত বনানী জিজ্ঞেস করে, "কি হয়েছে?"
"কথা বলার সময় নেই। চলো এখনই আমাদের মেয়ের হোস্টেলে যেতে হবে। পড়িমরি করে মণিশঙ্কর একটা ট্যাক্সি রিজার্ভ করে দু'জনেই গেল কলকাতায়। পৌঁছুতে সকাল হয়। হোস্টেলের ভেতরে পুলিশের গাড়ি দেখে আরও ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে হস্টেলের উপরে উঠতেই দেখে সাদা কাপড়ে ঢাকা কে যেন শোয়ানো আর পাশে কয়েকজন মেয়ে বসে। পুলিশ ওদের দেখতে পেয়েই জিজ্ঞেস করে, "আপনারা কি উর্মি চক্রবর্তীর বাবা-মা?"
"হ্যাঁ"কোনোমতে বলে মণিশঙ্কর।
"আপনাদের জন্যই অপেক্ষা করছি।"
"মানে!" মণিশঙ্কর কম্পিত স্বরে বলতেই একজন পুলিশ বলে, আপনাদের মেয়ে আর নেই।"
"কী যা-তা বলছেন?"
"সত্যি বলছি।"
"কিভাবে হলো? "কাঁদতে কাঁদতে মণিশঙ্কর বলতেই পুলিশ বলে, "উনাকে বাথরুমে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে।"
"কারণ জানতে পেরেছেন?"
"না"তবে তদন্তে যদি কেউ দোষী সাব্যস্ত হয় তবে শাস্তি পাবেই। এবার বডি পোস্টমর্টেমে নিয়ে যেতে হবে।"
ততক্ষণে বনানী উর্মিকে জাপটে ধরে চুমু খেতে থাকে। বনানীর বুকফাটা হাহাকারে কেঁপে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর। কিংকর্তব্যবিমূঢ় মণিশঙ্কর চেয়ে থাকে উর্মির মুখে অপলক।
কানে ভেসে আসে মেয়ের কথা, "বাবা, আজ দিদিরা ডেকেছে আমায়।
কেন? জানিস কিছু?
"না বাবা। মনে হচ্ছে র্যাগিং। তবে আমি ভীতু নই। আমাকে পড়তেই হবে আমার কিচ্ছু হবে না। তোমরা চিন্তা করো না।" মুহূর্তে গাড়ি মেয়েকে নিয়ে যেতেই যেন অন্ধকারে ঢেকে যায় চারদিক।
রচনাকাল তাং- ২৬-০৯-২০২৩
No comments:
Post a Comment