আত্মিক টানে ভাষা বাংলা কবিতাটি লিখেছেন কবি খুশী সরকার।
আত্মিক টানে ভাষা বাংলা বিপ্লবাত্মক কবিতাটি লিখেছেন কবি খুশী সরকার।
কবিতার মূলভাব: মুখের কথার অর্থপূর্ণ ধ্বনিসমষ্টিই ভাষা। এই ভাষা মানুষের সহজাত সংস্কার। এর সঙ্গে মানুষের নাড়ীর টান। সভ্যতা, সংস্কৃতির মূল আধার। হৃদয়ের সমস্ত ভাব বাঙ্ময় রূপ লাভ করে ভাষার সাহায্যে। এই ভাষা যখন মায়ের ভাষা তখন বাংলা মাতৃভাষা রূপে বাঙালির প্রাণের ভাষা।তা তার একান্তই নিজস্ব। তার সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাঙালির অস্তিত্ব, আবেগ, অনুভূতি এবং সমস্ত ভাবৈশ্বর্য।
কবিতা-- আত্মিক টানে ভাষা
কলমে--খুশী সরকার
ভাষায় প্রকাশ মানুষের চিত্তবৃত্তি যত
সমাজ, সংস্কৃতি, সভ্যতার মূল উপাদান,
ভাষাতেই ফোটে শত শত শতদল
পাঁপড়ি মেলা সুগন্ধের সাগর অতল।
ভাষাই ভাবের বাহন,
বাঙ্ময় জীবন, প্রকৃতি
চঞ্চল তরঙ্গে নদীও নর্তকী
মায়া-মমতা, স্নেহ প্রীতি।
ভাষার স্বাতন্ত্র্যে সর্বশ্রেষ্ঠ জীব মানুষ
প্রতীক দ্যোতকতা ভাব, ঐশ্বর্য্যে পূর্ণ অন্তর
সেই ভাষাই যখন মায়ের ভাষা
সেই মাতৃভাষা বাংলা আমার
সমাজ, সংস্কৃতি, সভ্যতার মূল উপাদান,
ভাষাতেই ফোটে শত শত শতদল
পাঁপড়ি মেলা সুগন্ধের সাগর অতল।
ভাষাই ভাবের বাহন,
বাঙ্ময় জীবন, প্রকৃতি
চঞ্চল তরঙ্গে নদীও নর্তকী
মায়া-মমতা, স্নেহ প্রীতি।
ভাষার স্বাতন্ত্র্যে সর্বশ্রেষ্ঠ জীব মানুষ
প্রতীক দ্যোতকতা ভাব, ঐশ্বর্য্যে পূর্ণ অন্তর
সেই ভাষাই যখন মায়ের ভাষা
সেই মাতৃভাষা বাংলা আমার
মায়ের মত কোমল, মধুর স্নেহময়ী।
বাঙালী আমি,বাংলা আমার প্রাণ
অস্তিত্বের শিকড় বাংলার রসে পুষ্ট
বাংলার বাঁশরীতে গাই গান।
হৃদয়ের যত আবেগ উচ্ছ্বাস
হাসি, কান্না, ভালোবাসা
সবেতেই মায়ের স্নিগ্ধ ছোঁয়া
যেন মুক্তো জ্বালা শিশির ঠাসা।
বাংলা আমার আদর, সোহাগ
সবুজ বনানী ঘেরা প্রকৃতি,
এই ভাষাতেই নেচেকুঁদে সাঁতার কাটি দিনমান
অনুরাগে বুনি আশা, বিশ্বাস, স্বপ্নের জাল,
এই ভাষাতেই গড়ি স্বপ্ন-সৌধ প্রেমের তাজমহল,
ভাব সমুদ্রে অবগাহন, জ্ঞান আহরণ,
নিত্য ফোটাই শতশত কলি,
অলি হয়ে ভ্রমি ফুলে ফুলে
মধুতে মুগ্ধ মন।
কাঠবিড়ালি হয়ে লাফিয়ে উঠি
জড়িয়ে ধরি পরম মমতায়,
নেচে উঠি খঞ্জনার ঘুঙুরপায়ে,
ফিঙে হয়ে নাচি বিটপের ডালে,
দোয়েলের শিসে বাংলায় প্রাণ খুঁজে পাই।
বাংলা ভাষা আমার মন-আকাশে
রামধনুর বর্ণবৈভব
বিকশিত কদম্বে ভাবনার ভাব,
নাড়িতে বাজে গভীর টান,
আত্মিকতার নিবিড় বান,
মাতৃভাষা ভালবেসে, মর্যাদার বোলে
আত্মত্যাগের সুখে আজও
স্মৃতিতে মুখ তোলে,
বীর শহীদ সালাম, জব্বার, রফিক,
মহান স্বীকৃতির পতাকায়
গর্বিত বুক আকাশ ছুঁয়ে যায়।
আজও জীবনের ধ্রুবতারা,
সাহিত্যের অমর স্রষ্টারা
বিশ্ব বন্দিত বাংলা ভাষায় লিখে অনির্বাণ-----
হেম, নবীন গোবিন্দ, মধু, রামমোহন ঈশ্বর,
বঙ্কিম প্রভাত, ত্রৈলোক্য, শৈলজা, রবীন্দ্রনাথ
মানিক তারা, বিভূতি, নজরুল মোহিত
সত্যেন্দ্র জীবনানন্দ বুদ্ধদেব অমিয়,সুধীন,
আশা,লীলা, স্বর্ণ কামিনী, যতীন।
বিশ্বকবির বাংলা সাহিত্য সৃষ্টি
বিশ্ব দরবারে বিশ্ব খেতাব জয়,
প্রাণের ভাষা বাংলা আমার,
আমার পরিচয়।
আত্মিক টানে ফাটল আজ বিশ্বায়নের বিষে
পরানুকরণপ্রিয় বাঙালি উন্মত্ত আত্মনাশে।
স্বকীয় স্বরূপ ভাঙছে কেবল
বিপন্ন মাতৃভাষা,
এসো বাঙালি যত, বাংলাকে ভালোবেসে,
বাঁচাই গর্বের ধন বাংলা ভাষা।
প্রতিরোধ, প্রতিবাদে,
নতুন নির্মাণে
আন্দোলন একটা ----
দুর্জয়, দুঃসাহসী,
দুরন্ত প্লাবনী নতুন জমি
আবাদ করি চষি।
আবাদ করি চষি।
তাং--২১-০২-২০২০
No comments:
Post a Comment