Role of Women and Attitude towards Women Story by Khushi Sarkar - Nabo Mukul

Latest

Bengali poem, Short story, essay and modern poems as education base

14 Nov 2018

Role of Women and Attitude towards Women Story by Khushi Sarkar

Role of women and attitude towards women by Khushi Sarkar.

Role of women and attitude towards women by Khushi Sarkar

‘নারীর ভূমিকা ও নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি’ প্রসঙ্গে গল্পটি লিখেছেন  খুশী সরকার।

Khushi Sarker wrote the Short Story about 'Role of Women and every aspect of Women'.

About the Story:
In many ways social and family sources are affected. This is the reason of loss or damage to the whole country as well as the loss of the country, because of the nation's development of women nation. In fact, if half of the population of the country and the rest of the country's population is made poisoned due to distorted mentality, then the whole nation will be thrown into death by poisoning, It can be absolutely confirmed.

নারীর ভূমিকা ও নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি
খুশী সরকার

সামাজিক ও পারিবারিক সূত্রে নানাভাবে পীড়িত। এই যেমন সংকোচের বা লজ্জার তেমনি গোটা দেশের পক্ষে ক্ষতির কারণ নারী থেকে সৃষ্টি জাতির নারী একটা জাতির উন্নতির সোপান বস্তুত দেশের জনসংখ্যার অর্ধেক নারী আর সেই সঞ্জীবনী সুধাকে যদি বিকৃত মানসিকতার দরুন বিষে পরিণত করা হয় তাহলে সে বিষপানে গোটা জাতি একদিন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়বে এ একেবারে নিশ্চিত করে বলা যেতে পারে।

নারী ও পুরুষ প্রকৃতিগতভাবেই ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। 'নারী' শব্দটি এসেছে নারী ধাতু থেকে।নৃ+নিচ্। আবার পরাশর সংহিতা' ই বলা হয়েছে, নারী শব্দের মানে বৃদ্ধি পাওয়ানো। 'নারয়তি ইতি নারী' আর 'পুরুষ' শব্দের অর্থ পূরণ করা। এই 'পুরুষ' শব্দটি এসেছে 'পূর' ধাতু থেকে।

মাটির সঙ্গে বীজের যেমন সম্পর্ক নারীর সঙ্গে পুরুষের ও তেমন সম্পর্ক মাটি বীজকে ধারণ করে পোষণ করে এবং উদগত করে তোলে। নারী আসলে প্যাসিভ অর্থাৎ গ্রহণমুখী, সক্রিয় আর পুরুষ নিষ্ক্রিয় । সে অপরকে পরিপূরণ করে। নারী তার উদ্বর্ধনী শক্তির দ্বারা পুরুষকে পোষণ করে আর পুরুষ নারীর এই সক্রিয় শক্তির দ্বারা তাঁর নিষ্ক্রিয়তা উপেক্ষা করে এমন ভাবে উদ্বোধিত হয় যাতে সে সতাদর্শের অনুগামী হয়ে জয়ের মুকুট মাথায় নিয়ে নারীর সম্মুখীন হয় এবং তার দ্বারা সম্বর্ধিত হয়।

এ ভাবে নারী যখন স্বামীর বৃত্তিগুলিকে পুষ্ট ও সম্বর্ধনে যত্নবতী হয় সেই 'মিলন‌ই শুভ, আর এই শুভ মিলনে সুসন্তানের জন্ম হয়। মাতৃত্বেই নারীর চরম সার্থকতা। বারট্রেন্ড রাসেল তাঁর 'প্রিন্সিপাল অফ সোশ্যাল রিকনস্ট্রাকশন' এ বলেছেন, নারীর জীবন মাতৃত্বে কেন্দ্রীভূত। নারীই জাতির নিয়ন্ত্রী। নারীর সমস্ত সহজাত সংস্কার ও প্রবৃত্তি--- জ্ঞাত বা অজ্ঞাতসারে তাকে সেই দিকেই চালিত করে। আবার হ্যাভলক এলিস‌ও বলেছেন,--- প্রকৃতি নারীকে এমন ভাবেই সৃষ্টি করিয়াছে --- যাহাতে তাহার সৃষ্টিকারিনী শক্তি এবং প্রাণের ঐকান্তিক আকাঙ্ক্ষা প্রধানত সন্তান গঠনেই কেন্দ্রীভূত। যতদিন নারী নারী---- ইহা এইরূপ‌ই হইতে বাধ্য।

এই সহজাত সংস্কারেই নারী সমস্ত পারিপার্শ্বিক, স্বামী ও সন্তানকে পুষ্ট করে বেঁচে থাকা ও বৃদ্ধি পাওয়াকে ত্বরান্বিত করে। সঠিক সন্তানচর্যার মধ্যেও মাতৃত্ব যেমন তৃপ্ত হয় তেমনি সন্তানও তার সুপ্ত গুণাবলীর বিকাশে পরিবারে ও সমাজে যোগ্য শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারে। শিশুর জন্মের পাঁচ--সাত বছর বয়সে মানবিক গুণাবলী, যেগুলি জন্মের সময় থেকেই তার মধ্যে সুপ্ত অবস্থায় থাকে, সেগুলিকে উপযুক্ত সময়ে খেলাচ্ছলে চাড়িয়ে দিতে হয়। সহজাত সংস্কারগুলিকে অভ্যস্ত সংস্কারে পরিণত করতে মা-ই পারে, ফলে সেগুলি যদি একবার তার জীবনে অভ্যস্ত সংস্কারে পরিণত হয় তাহলে আর ভয় নেই। সে কোনোভাবেই তার অভ্যস্ত সংস্কারের বাইরে অন্যায় বা অসত্য কাজে লিপ্ত হবে না,-- এইটুকু মাথায় রেখে সুস্থ যোগ্য মানবিক নাগরিক গড়ে তোলা---- একজন সৎ, সদাচারী, সেবাপরায়ণ মায়ের পক্ষেই সম্ভব----- আর এতেই মা আনন্দিত হয়ে আনন্দিত হয়ে সন্তানকে সম্বর্ধিত করে। বৃদ্ধির দিকে, উন্নতির দিকে এগিয়ে দেয়।

অথচ এই মহৎ ভাবনার আদর্শে অনুপ্রাণিত নারী যখন সম্পূর্ণভাবে নিজেকে উৎসর্গী করে তার পরিবারের জন্য আর তখনই পুরুষশাসিত সমাজ আর তখনই পুরুষ শাসিত সমাজ নারীর এই আত্মত্যাগকে ধরে নেয় তার দুর্বলতা। প্রকৃতিগত কারণে শারীরিক গঠনও পুরুষের কাছে দুর্বলা, অবলা ইত্যাদি রূপে নারী বিবেচিত হয়। ফলে পুরুষ পরিবারে, সমাজে নিজেদের প্রাধান্য কায়েম করতে নারীর উপর চাপিয়ে দেয় নানা অনুশাসন, ব্যাখ্যা করে নারী গৃহের অভ্যন্তরের বস্তু । বাইরের জগতে প্রশাসনিক কিংবা রাজনীতিক দরবারে যাবার তার অধিকার নেই, বরং বলা ভালো বহির্জগতের সঙ্গে কর্ম ও জ্ঞানের সম্পর্ক রাখার ক্ষমতাই তার নেই, সুতরাং নানা বিধিনিষেধের চাপে নারী আজ ভোগ্যপণ্য রূপে ব্যবহৃত। মুহূর্তে মুহূর্তে শোনা যাচ্ছে ধর্ষিতা নারীর আর্তনাদ।

এই হৃদয়বিদারী আর্তনাদ থামাতে কিছু ভন্ড পুরুষ সাময়িক বিচারের ভান করেন। কিন্তু তারপর? আবার কোনো অন্ধকার কিংবা আলোতে, গোপনে কিংবা প্রকাশ্য রাস্তায় সেই আকাশ বাতাস মুখরিত আর্তনাদ। আবার মিছিল। মোমবাতি জ্বালিয়ে শোক প্রকাশ। এই ভাবেই চলছে, হয়তো চলবে----

যুগে যুগে মনীষীরা, যেমন রাজা রামমোহন রায়, বিদ্যাসাগর, নারীকে তার স্বমর্যাদা দানে তৎপর হয়েছেন। বার বার বোঝাতে চেয়েছেন, নারীই জাতির মূল ভিত্তি। যে জাতির নারী যত উন্নত সেই জাতি তত উন্নত। তাই নারীকে নানা অপবাদে কিম্বা অত্যাচারে পীড়ণ করলে সেই জাতির উন্নতিই হয় পীড়িত।

কিন্তু আপন পাশবিক ও দৈহিক শক্তির ঔদ্ধত্যে কিছু কামতাড়িত, লোলুপ পুরুষ নারীকে বানিয়েছে তাদের ভোগ্যপণ্য। সেই পশুতুল্য পুরুষদের বলতে ইচ্ছা করে----- 'ওরে মূর্খ পুরুষ, কার বলে বলীয়ান তুই আজ? বড্ড হাসি পায় তাদের আহাম্মকী দেখে। মনে পড়ে শৈবাল আর দিঘির কথা, একদা----
'শৈবাল দিঘিরে বলে উচ্চ করি শির
লিখে রেখো, এক ফোঁটা দিলেম শিশির'  যে দিঘি না থাকলে শৈবালের কোনো অস্তিত্বই থাকত না সেই মূর্খ শৈবাল দিঘিকে অহংকারে স্ফীত হয়ে বলে, এক ফোঁটা শিশির দেওয়ার কথা লিখে রাখতে। এইখানেও সেই একই ঘটনা। যে নারী পুরুষের সৃষ্টির মূলে, যার অপরিসীম দয়ায়, ক্ষমায়, সহানুভূতিতে আজ এই জীবন লাভ করেছো, এই পৃথিবীর রস-রং- রূপ উপভোগ করতে পারছো, সেই আজ তোর লালসার শিকার, তোমার ভোগ্যপণ্য।ছিঃ, ভাবতে ঘৃণা হয়। পুরুষের নিজ কলুষে কলুষিত এই সমাজ। কোনো নারী একা একা ধর্ষিতা হয় না। তাকে এই সমাজের কোনো না কোনো পুরুষ ধর্ষণ করে। আর সেইজন্য সে ধর্ষিতা। তোমার উপহাস্যাস্পদ।

না, আর উপহাসের পাত্রী নারী নয়। পরিশেষে মহাভারতের সেই চিরকালীন তাত্ত্বিক বাণী দিয়ে শেষ করি------- 

'যদা যদা হি ধর্মস্য গ্লানির্ভবতি ভারত
তদাত্মানং  সৃজংমেহম্
পরিত্রাণায় সাধুনাং বিনাশায় চ দুষ্কৃতাম্ ধর্মসংস্থাপনার্থায় সম্ভবামি যুগে যুগে।'

    *********সমাপ্ত************

No comments:

Post a Comment