Kuasha Short Story Written by Poet Khushi Sarkar - Nabo Mukul

Latest

Bengali poem, Short story, essay and modern poems as education base

27 Nov 2021

Kuasha Short Story Written by Poet Khushi Sarkar

Kuasha short story written by Poet Khushi Sarkar.

Short Story - Kuasha,
Author - Khushi Sarkar,

Poet Khushi Sarkar has written the short story Kuasha (the Fog).

The main theme of the short story is: the lives of poor people in the economic crisis in the clutches of the extreme corona. Don't go for less that your full potential. In this critical moment, the condition of the people in the society is extremely dire. Such a person is Amal. Amal earns his living from this profession. But in the captive life of Karona, why only this profession, all professions have come to a standstill. Nowadays, with the unprecedented success of modern science, no one wants to go to the trouble of batna butter. That is why the market of powdered spices is booming. The use of powdered spices of various reputed companies from house to house. In the end they decided to move to the city. And then the married girl and her grandson fell on their necks at the difficult time of husband and wife. The Kuasha (fog) of poverty surrounded him.

কুয়াশা ছোটগল্পটি লিখেছেন কবি খুশী সরকার

গল্পটির উপজীব্য বিষয়: অতিমারী করোনার থাবায় অর্থনৈতিক দুরবস্থায় গরিব মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত। একে গরিবের 'নুন আনতে পান্তা ফুরোয়'তা-ই আবার করোনা দোসর।এই সংকটময় মুহুর্তে সমাজের দিন আনা দিন খাওয়া মানুষের অবস্থা চরমে।এমন একজন মানুষ অমল।পাটা ধার করা তার পেশা। এই পেশার রোজগারে অমলের জীবিকা নির্বাহ হয়। কিন্তু করোনা কালের বন্দী জীবনে শুধু এই পেশা কেন,সব পেশাতেই ভাটা পড়েছে।'গোদের উপর বিষ ফোরা'র মতো অবস্থা। বর্তমান বিজ্ঞানের অভূতপূর্ব সাফল্যে আজকাল বাটনা বাটার ঝক্কিঝামেলায় কেউই যেতে চায় না।তাই গুঁড়ো মশলার বাজার রমরমা। ঘরে ঘরে নানা নামিদামি কম্পানির গুঁড়ো মশলার ব্যবহার।তাই চরম অর্থনৈতিক অভাবে অমল গ্রামে বহুকষ্টে পাটা ধার করে বেরায়। শেষে সিদ্ধান্ত নেয় শহরে পাড়ি দিবে তারা। আর তখনই স্বামী-স্ত্রীর কঠিন সময়ে এসে পড়ে ঘাড়ে বিবাহিতা মেয়ে আর নাতি। দারিদ্র্যের কুয়াশা ঘিরে ধরে তাকে।

কুয়াশা ছোটগল্প
লিখেছেন কবি খুশী সরকার

ঘর থেকে বেরিয়ে মিতা ইতিউতি চাইতেই হঠাৎ দেখে বারান্দার এক কোণে দেওয়ালে ঠেস দিয়ে বসে আছে অমল অন্ধকারে। চারদিকে কুয়াশায় ঢেকে গেছে। "ঠাণ্ডা লাগছে না তোমার"--- জিজ্ঞেস করে মিতা।

এই কুয়াশার সামান্য ঠাণ্ডায় আর কি হবে? জীবনটাই তো আমার আস্ত কুয়াশা।

"কি সব হেঁয়ালি কথা বলছো"

হেঁয়ালি নয়, একেবারে সত্যি কথা। মনে পড়ছে সেই দিনগুলো তখন মানুষের ঘরে ঘরে শিলপাটার ব্যবহার ছিল। সকাল থেকে দুপুরের মধ্যেই ভালো রোজগার হয়ে যেত। আর বেশি ঘুরতেও হতো না।

খেয়ে পরেও কিছু জমাতে পারতাম। তবেই তো মেয়েটাকে পড়াশোনা শেখাতে পেরেছি, তার বিয়েটাও দিয়েছি। কিন্তু এই করোনার গ্রাসে যেন সব শেষ হয়ে গেল! যে টুকু জমিয়ছিলাম সেটুকুও এই লকডাউনে বসে বসে খেয়ে ফেললাম।

আবার বেরোনো ছাড়া তো উপায় নেই তবুও ভালো লকডাউনটা উঠেছে।

"এত ভেবে কি হবে" নির্বিকারভাবে বলে মিতা।

তোমার শরীর আজকাল ভালো যাচ্ছে না।এই ঠাণ্ডায় বসে শরীর খারাপ করলে পয়সা পাবে কোথায়? চলো, ঘরে চলো"।

"হুম, দীর্ঘশ্বাস ফেলে ঘরে উঠে যায় অমল। বিছানায় বসে উদাসভাবে চেয়ে থাকে জানলার ফাঁক গলে চারদিক ছড়ানো কুয়াশার দিকে। নাও এখন শুয়ে পড়ো।

"চোখে ঘুম নেই"। তোমার মনে পড়ে মিতা, মনা যখন ছোট্ট, প্রত্যেকদিন আমার সঙ্গে যাওয়ার জন্য বায়না ধরত।তুমি কত করে বোঝাতে, কিছুতেই বুঝতে চাইত না। বাবার কোলে উঠবো, বাবার কোলে উঠবো, কত বায়না তার। যখন কোলে নিয়ে বলতাম, "তোমার জন্য বনকুল আনবো, অমনি গালে চুমু দিয়ে টুপ করে নেমে পড়ত"। একটু চুপ থেকে উদাসীন চাউনিতেই ঠোঁটে হাসি নিয়ে আবার বলে, "মেয়ে আমার সুখে আছে বলো? ছেলেটাও তো মন্দ নয়। রোজগারপাতি ভালোই করে কিন্তু কি জানি, মাঝে মাঝে ওদের ঠোকাঠুকি লেগেই থাকে। নাতিটাও কি সুন্দর হয়েছে,দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। আজকাল বড্ড ভাবায় বিষয়টা। শরীরটাও চলে না আর, রোজগার‌ও হয় না তেমন অথচ এখনি টাকা পয়সার বেশি প্রয়োজন।আর এসময়‌ই অতিমারীতে ব্যবসাটা প্রায় ওঠার জোগাড়! কি করে চলবে দুটো পেট!

পাশে দাঁড়িয়ে কথাগুলো শুনতে শুনতে মিতা হঠাৎ বলে ওঠে, অত আর চিন্তা করো না, যা হবার হবে। যাদের দুঃখ চিরকাল তাদের অত দুঃখ করলে কি চলে! ঠিক চলে যাবে কোনো না কোনোভাবে। ঈশ্বর আছেন তো। এখন শুয়ে পড়ো, ভোরবেলা আবার বেরোবে।

পরদিন অতি ভোরে উঠে হাত মুখ ধুয়ে অমল ছেঁড়া প্যান্টের বানানো ব্যাগটায় হাতুড়ি আর ছেনি ভরে নিয়ে বেরোনোর সময় মিতাকে ডাক দিয়ে বলে, দরজাটা বন্ধ করে দাও।

"হুম,আসছি"।ঘুমন্ত চোখ রগড়াতে রগড়াতে দরজাটা বন্ধ করে দিয়ে ঘরে যায় মিতা। ধীরে ধীরে অমল ব্যাগ নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে বাইরে দাঁড়ায়। তখনো ঘুমে আচ্ছন্ন গোটাপাড়া। কেউ কোথাও নেই। বাড়িঘর রাস্তাঘাট কিছুই দেখা যাচ্ছে না কুয়াশায়। প্রায় মিনিট পাঁচেক হাঁটতে হয় তাকে বড় রাস্তায় উঠতে। হাঁটতে হাঁটতে ভাবে, "আর কতদিন এভাবে চলবে? শরীর তো আর সাথ দেয় না কিন্তু তাকে হাঁটতেই হবে নইলে পেটে দুমুঠো ভাত পড়বে কিভাবে?" বড় রাস্তায় উঠতেই দেখতে পায় একটা খালি টোটো আসছে এদিকেই। সে টোটোতে উঠেই চলে আসে বালুরঘাটের রঘুনাথপুর মোড়ে। অটো থেকে নেমে ভাবে, শহরে তো আর খাওয়া নেই। শহরের বেশিরভাগ বাড়িতেই এখন গুঁড়ো মশলার ব্যবহার আর মিক্সি মেশিন। গ্রামে এখনো কিছু কিছু পরিবারে পাটার ব্যবহার আছে। ঠিক করে গ্রামেই যাবে। মিনিট পাঁচেক হেঁটে এক গ্রামে ঢুকতেই সুর ধরে, শিলপাটা ধা-আ-আ-র, শিলপাটা।শিলপাটা ধা-আ-আ-র,শিলপাটা।একটি আদিবাসী বউকে বাড়ির দরজায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বলে, ও বৌদি শিলপাটা ধার করাবেন নাকি? খুব ভালো ধার করে দেব, খুব কম দামে। করাবেন ?

"না না লাগবে না"

করান না বৌদি, এখনো ব‌উনি হয় নি।

অমলের কথা শুনে মহিলা কোনো উত্তর না দিয়েই বাড়ির ভিতরে চলে যায়। আবার হাঁটতে হাঁটতে অমল সুর ধরে---- শিলপাটা ধা-আ-আ-র, শিলপাটা।,শিলপাটা ধা-আ-আ-র, শিলপাটা। কিছুক্ষণ পরেই একটি বাড়ি থেকে দৌড়ে আসে একটি বাচ্চা মেয়ে, ও দাদু, ও দাদু আমাদের বাড়ি এসো, আমার মা শিলপাটা ধার করাবে।

মেয়েটির পিছন পিছন অমল গিয়ে দাঁড়ায় বাড়ির উঠোনে। একটি বউ সামনে এসে জিজ্ঞেস করে একটা পাটা ধার করাতে কত নেবেন,দাদা?

পাটা না দেখে তো বলা যাবে না,মা?

ঠিক আছে, আনছি বলেই বৌটি একটি মাঝারি আকারের পাটা সামনে রেখে বলে, "বলেন কত নেবেন"?

 ত্রিশ টাকা লাগবে মা।

তি-রি-শ টাকা!

মগের মুল্লুক নাকি যে এটুকু পাটা ধার করতে ত্রিশ টাকা নেবেন, বলেই পরক্ষণেই নিচু গলায় বলে কুড়ি টাকা দিব যদি পারেন করান, না পারলে আমি পাটা তুলে নিয়ে যাব। অগত্যা অমল কুড়ি টাকাতেই পাটা ধার করে বেরিয়ে পড়ে সেখান থেকে। সারাদিনে এপাড়া ওপাড়া এই গ্রামে ওই গ্রামে ঘুরে মাত্র ষাট টাকা রোজগার করে। দুপুরে একটি দোকানে বসে দশ টাকায় কিছু জল পানি খেয়ে প্রায় সন্ধ্যা নাগাদ অমল ফিরে আসে বাড়িতে হাঁপাতে হাঁপাতে। বাড়িতে ঢুকতে দেখেই মিতা তাড়াতাড়ি হাত মুখ ধোয়ার জল আর গামছা একটি ছেঁড়া মাদুর পেতে রেখে দেয়।

গুম্ হয়ে বসে থাকে অমল।

কি হল বসে আছো যে?শরীর খারাপ লাগছে?মিতা জিজ্ঞেস করে।

শরীর চলে না আর, পাগুলো বড্ড ব্যথা। কিছু খেতে দেবে?

একটু দাড়াও, দোকান থেকে পঞ্চাশ গ্রাম মুড়ি কিনে আনি বলেই দোকানে গিয়ে মুড়ি এনে খেতে দেয় মিতা।জল মুড়ি খেয়ে একটু সুস্থতা বোধ করে অমল।

পরক্ষণেই জিজ্ঞেস করে, "রান্না করোনি?"

"না, তেমন কিছু করিনি। সামান্য একটু চাল ছিল, ওই দুপুরে আমি ওইটুকু দিয়ে খেয়েছি। তুমি বরং চাল ডাল নিয়ে এসো,রান্না করছি।

মাত্র ষাট টাকা সারাদিনে কামাই করেছি। এখনকার দুর্মূল্যের বাজারে এতে কি হবে, বলো?

আর এই ব্যবসা চলবে না, শরীর ক্ষয়ে গেল। কিন্তু কি করবো, টাকা কোথায়!---

আপন মনেই বলে চলে অমল,বয়সও তো হয়েছে,আর এ বয়সে কোথায় বা যাবো?

ধীরে ধীরে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসে। আর চারদিক থেকে ঘিরে ধরে কুয়াশা। বিছানায় ছটফট করে, ঘুম নেই তার চোখে। শেষে কি না-খেয়েই মারা যাবে?

বিনিদ্র চোখে ভেসে ওঠে তার স্বপ্ন। ভেবেছিল শেষ বেলায় হয়তো একটু সুখের নাগাল পাবে। মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। সেও হয়তো ভালো আছে।এখন দুটো প্রাণী। এই ব্যবসা তাদের সাত পুরুষের।বাবার কাছ থেকে পাওয়া এই ব্যবসা সে কিছুতেই হাতছাড়া করতে চায়নি কোনোদিন কিন্তু এই প্রযুক্তির দুনিয়ায় মানুষ যন্ত্রের উপর নির্ভরশীল। কায়িক শ্রম করতে চায় না কেউই। কে আর অত কষ্ট করে শিলপাটায় মশলা বাটবে! যেখানে এত এত রকমারি গুঁড়ো মশলার বাহার!আপন মনে বিড়বিড় করে বলতে থাকে অমল।

সেই সময় দুটো রুটি কাঁচা লঙ্কা পেঁয়াজ থালায় দিয়ে খেতে দেয় মিতা। ওই শুকনো রুটি খেতে খেতে অমল মিতার দিকে তাকিয়ে বলে, চলো এখান থেকে আমরা দিল্লি চলে যাই।

তা বেশ তো।চলো কিন্তু------

কিন্তু কি?

যেতেও তো টাকা পয়সা লাগবে। তাই না?

হুম।

আর কয়েকটা দিন দেখো,যাওয়ার মতন কিছু টাকা হলেই না হয় যাওয়া যাবে।

অনেকক্ষণ চুপচাপ থেকে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে অমল, ঠি-ক আছে।

বেশ কয়েকদিন একইভাবে ব্যবসায় বেরিয়ে পড়ে অমল। শরীর বড় ক্লান্ত। রোজগার তেমন আর বেশি হয় না। শেষে সিদ্ধান্ত নেয় এভাবেই বেরিয়ে পড়বে তারা। ঈশ্বর আছেন মাথার উপর।

দুদিন পর ব্যাগপত্র গুছিয়ে প্রস্তুত হয় তারা।

মিতা রাজী হলেও মনে মনে কষ্ট অনুভব করে, এতদিনের তার এই সংসার। অভাব থাকলেও তার একান্ত আপন, তার নিজের হাতে গড়া। চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে তার নিত্য ব্যবহার্য জিনিসপত্র। দীর্ঘ ব্যবহারে মলিন বাসন, কালি মাখা হাঁড়িকুড়ি, চারদিক ছড়ানো ছেড়া জামা লুঙ্গি শাড়ি-ব্লাউজ, নিজের হাতে লাগানো ফুলের গাছ আরো কত কি। এই সংসারে তার অভাব ছিল ঠিকই কিন্তু মায়া মমতায় ধরে রেখেছিল সে। গোবর দিয়ে নিকানো উঠোন ঝকঝক করছে। ঘরের কোণে পড়ে থাকা ভাঙ্গা খেলনাগুলো যেন মেয়ের মতোই তাকে জড়িয়ে ধরে রাখতে চাইছে। কিছুতেই মন সায় দিচ্ছে না মিতার তবুও তবুও তাকে-------

বুকের ভিতর জমাট বাঁধা কষ্টটা যেন দলা পাকিয়ে বেরিয়ে পড়তে চাইছে। নিজের হাতে গড়া সংসার তার। তাই মনে মনে ভাবে, যাবার আগে মেয়েকে একবার ফোনে বলে যাবে, সে যেন কোনো এক ফাঁকে সব জিনিস নিয়ে যায়, সংসারে তার কাজে লাগবে।

পরের দিন অতি ভোরে দুজনেই ঘরে শিকল চরিয়ে উঠোনে এসে দেখে ভীষণ কুয়াশা কিন্তু এখনি না বের হলে ট্রেন ধরা যাবে না। তাই দু'জনেই দরজার বাইরে বেরিয়ে এসে হাঁটা দেয়। হঠাৎ সামনে নজর যেতেই মিতা দেখতে পায় কে যেন হনহনিয়ে হেঁটে আসছে তাদের দিকে।

"এত্ত সকালে কুয়াশার মধ্যেও কে আসছে এদিকে?"

"এই দেখো সামনে" মিতা অমলকে ঠেস দিয়ে বলে। "কত লোকের কত সমস্যা"। হয়তো কোনো কাজে কোথায়ও আসছে" না দেখেই হাঁটতে হাঁটতে বলে অমল।

"দেখোই না"

আসুক,চলো তো তাড়াতাড়ি। দেরি হয়ে গেলে ট্রেন ধরা যাবে না, বুঝতে পারছো?

অমলের কথা শুনে চুপচাপ হাঁটতে থাকে মিতা। ওরা এগোতে থাকে যতই ততই যেন কুয়াশা ভেদ করে চেহারাটা স্পষ্ট হয়ে সামনে আসে। মুহূর্তেই চেহারাটা দেখে মিতার চক্ষু চড়কগাছ।

"মনা, কিরে এত সকালে আসছিস?" বিস্মিত চোখে জিজ্ঞেস করে মিতা।

অমনি অমল‌ও মনার দিকে চেয়ে জিজ্ঞেস করে, এত কুয়াশার মধ্যে এলি মা? নাতির ঠাণ্ডা লেগে যাবে তো?

"আমরা আজকে বাইরে যাবো, তোর মা ফোন করেছিল বুঝি?"

কোনো প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে মনা ছেলেকে কোলে নিয়ে আর দু'গাল বেয়ে ঝরে পড়ে অশ্রুধারা।

"কি রে মা, কথা বলছিস না যে?" একসঙ্গেই বলে ওঠে অমল আর মিতা। বড় আশঙ্কার মেঘ জমে ওঠে মনে।

"কি হয়েছে, কাঁদছিস কেন?" বুকে জড়িয়ে ধরে মিতা মেয়েকে। ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলে মনা, বাবা, মা, আমি আর ওখানে থাকতে পারলাম না গো, নিত্যদিন অভাবের মধ্যে অশান্তি ঝগড়া। প্রায় দিন মদ খেয়ে এসে মারধোর করে, ছেলেটাকেও মারে। আর সহ্য করতে পারলাম না। তাই সব ছেড়ে আমি একেবারে চলে আসলাম তোমাদের কাছে। "রাখবে না আমাকে তোমাদের কাছে?

মনার এই প্রশ্নের 'না' উত্তর দেওয়ার ক্ষমতা ছিল না অমল কিম্বা মিতার কারুরি‌ই, শুধু একজন আরেকজনের দিকে চেয়ে রইল অপলক কিছুক্ষণ। তারপর মিতা নাতিকে কোলে নিয়ে মেয়েকে সামনে রেখে আবার হাঁটতে থাকল ওরা ঘরমুখো। ততক্ষণে কুয়াশা ওদের ঘিরে ধরেছে সর্বাঙ্গে আর অমল সেই কুয়াশায় যেন নিজেকেই নিজে আর পাচ্ছে না দেখতে।


কলমে--খুশী সরকার
তাং--১৪-১১-২০২১

No comments:

Post a Comment

Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.